করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউন জনজীবনকে স্থবির করে তুলেছে। যদিও সরকারিভাবে এটিকে সাধারণ ছুটি বলা হচ্ছে। দু দফা এই সাধারণ ছুটির সময়কাল ৫ মে পর্যন্ত ধার্য্য করলেও তা তৃতীয়বারের মত বৃদ্ধি করে ১৫ মে করা হচ্ছে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
লকডাউনের সময়ে দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল মানুষ, এমনকি স্বল্প আয়ের মাসিক বেতনভুক্ত মানুষের আয়ের পথও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। যেহেতু দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে, তাই এখন তাদের হাতে কোনো টাকা নেই। এত কম আয় করে তারা কখনো কোনো সঞ্চয়ও করতে পারে না কিংবা তাদের সঞ্চয় অত্যন্ত কম। বৈশ্বিক এই সংকটের সময়ে জীবনধারণের জন্য আমাদের তেমন কিছু করারও নেই। এমতাবস্থা সরকার মানবিক কারণে লকডাউন কিছুটা শিথিল করেছে।
অন্যদিকে সামাজিক দূরত্বের বিধিবিধান মেনে গার্মেন্টস কারখানাগুলিও সব একে একে খুলে দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরিবহনসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিও খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সভাপতি করোনা প্রকোপে আক্রান্ত সব পোষাক শ্রমিকদের সুচিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া অর্থনীতিকে সচল এর বিকল্প ভাবা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় কৃষকেরা তাঁদের পণ্য রাস্তায় ফেলে দিতে বা পানির দামে তাঁর উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। দিন যত যাচ্ছে ততই মানুষের জীবিকার ওপর চাপ বাড়ছে।
যদিও সবার আগে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার ব্যাপারটি অগ্রাধিকার পায় তথাপী আশংকা করা হচ্ছে যে, করোণার চেয়ে অনেক বেশী মানুষ অভাব ও ক্ষুধার তাড়নায় মারা যেতে পারে। তাই সরকারকে চলমান অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে অগ্রধীকার দিয়ে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদেরকে ড্ল-ভাত হলেও খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সেইসঙ্গে ঘরে ঘরে শ্লোগান তুলতে হবে : “অর্থনৈতিক সচেলতাই হতে করোনা মোকাবেলার বলিষ্ঠ হাতিয়ার”।